ক্রীড়া ডেস্ক
কাতার বিশ্বকাপের আগে একের পর এক বিতর্কে তৈরি হচ্ছে। এ বার বিতর্ক কাতারের আরও একটি আইন নিয়ে। সে দেশে মহিলারা খোলামেলা পোশাক পরতে পারেন না। তাঁদের সব সময় শরীর ঢেকে রাখতে হয়। বিশ্বকাপ দেখতে আসা সমর্থকদেরও সেটা মেনে চলতে হবে। কোনও মহিলা দর্শক খোলামেলা পোশাক পরলে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। জেলের সাজা পর্যন্ত হতে পারে।
জানা গিয়েছে, কাতারে পা রাখা বিদেশি সমর্থকদের জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তাঁরা যাতে খোলামেলা পোশাক না পরেন। মূলত কাঁধ ও হাঁটু ঢেকে রাখতে হবে তাঁদের। এক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, দর্শকদের কোনও বিশেষ পোশাক পরতে বলা হচ্ছে না। তাঁরা নিজেদের পছন্দের পোশাকই পরতে পারেন। তবে খোলামেলা পোশাক পরা যাবে না। শুধু স্টেডিয়াম নয়, মিউজ়িয়াম ও অন্যান্য সরকারি দফতরে গেলেও শরীর ঢাকা পোশাক পরতে হবে তাঁদের।
শুধু স্টেডিয়ামের বাইরে নয়, স্টেডিয়ামের ভিতরেও দর্শকদের পোশাকের দিকে নজর রাখা হবে। কাতার বিশ্বকাপের চীফ টেকনোলজি অফিসার নিয়াস আব্দুলরহিমান বলেছেন, ‘‘স্টেডিয়ামে আমরা অত্যাধুনিক ক্যামেরা বসিয়েছি। সেই ক্যামেরার সাহায্যে বিশেষ একটি আসনের দিকেও ভাল করে লক্ষ্য রাখা যাবে। পুরো বিষয়টা রেকর্ড করা হবে। তা হলে পরবর্তীতে প্রয়োজন পড়লে আমরা রেকর্ডিং দেখতে পারব। দর্শকদের পোশাকের দিকে নজর রাখব আমরা।’’
ফিফা অবশ্য জানিয়েছে, দর্শকরা চাইলে যে কোনও পোশাক পরতে পারেন। সেটা তাঁদের ইচ্ছার উপর নির্ভর করছে। কিন্তু দর্শকদের কাছে অনুরোধ করা হচ্ছে, আয়োজক দেশের আইনের কথা মাথায় রেখে যাতে তাঁরা পোশাক পরেন। আরও কিছু নিয়ম মাথায় রাখতে হবে দর্শকদের। প্রকাশ্যে কারও সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করার সময় দাঁড়িয়ে করমর্দন করাই ভাল। বিশেষ করে বয়সে বড় কারও সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করার সময় দাঁড়ানো এক রকম বাধ্যতামূলক। কোনও মহিলার সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করার সময় নিজে থেকে করমর্দনের জন্য হাত না বাড়ানোই ভাল। বরং সেই মহিলার প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করা উচিত। তিনি করমর্দনের জন্য আগ্রহ দেখালেই শুধু হাত বাড়ানো যেতে পারে। কারণ কাতারের অধিকাংশ মহিলাই অন্য পুরুষের স্পর্শ এড়িয়ে চলেন। সুতরাং আগ বাড়িয়ে হাত না বাড়ানোই ভাল। নিরাপদ থাকতে ডান হাত নিজের হৃৎপিণ্ডের উপর রাখতে পারেন। কাতারের সমাজে এ ভাবেও সৌজন্য বিনিময়ের রীতি রয়েছে।
বান্ধবী বা স্ত্রীকে নিয়ে বিশ্বকাপ দেখতে গেলে রাস্তায় তাঁর হাত ধরে হাঁটতে পারেন। প্রকাশ্যে জড়িয়ে না ধরাই ভাল। প্রিয় দলের জয়ের আনন্দে তাঁকে কিন্তু চুম্বন করে ফেলবেন না। তা হলেই বিপদ। প্রকাশ্যে চুম্বন কাতারে আইনত অপরাধ।
সূত্র : বিবিসি